Google Alert – সেনা
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কম কূটনীতি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শলা-পরামর্শ, হুমকি-ধমকি, সমর বোদ্ধাদের জল্পনা-কল্পনা; ভবিষ্যদ্বানী-কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। ২০২২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে গত তিন বছরেরও বেশি সময়ে যুদ্ধবন্ধে কত কি যে করেছে পশ্চিমারা তার ইয়ত্তা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-কেইই কমে ছেড়ে দেননি রাশিয়াকে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর কয়েকদফা ফোনালাপ শেষে যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প রীতিমতো ৫০-৬০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন একবার। কয়েক দিন পরে তা নেমে এলো ১০ তেকে ১২ দিনে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখে সেই এক কথা-ভূখণ্ড ছাড়তে হবে। একই সঙ্গে ছাড়তে হবে ইউক্রেনের ন্যাটো অন্তর্ভুক্তি স্বপ্নও। দিন শেষে সেই সুরই শোনা গেল খোদ ট্রাম্পের মুখেও। রোববার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে চড়া গলায় বললেন, ‘ন্যাটো স্বপ্ন ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে। ভুলতে হবে ক্রিমিয়া ফেরতের আশাও।’
শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে টানা ৩ ঘণ্টার বৈঠকের পর থেকেই নিজের অবস্থান থেকে নড়ে গেছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন-ইউরোপ তেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপ নয়, পুতিনের কণ্ঠে কথা বলছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এ সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক সংকেত হিসাবে দেখছেন মিত্ররা। গত একদিনে ট্রাম্প যা যা বলেছেন, তার অনেক কিছুই রাশিয়ার প্রচার-তথ্যের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যায়। তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে যদি জেলেনস্কি লড়াই বন্ধ করে দেন।’ তিনি ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদও একেবারে খারিজ করে দিয়েছেন এবং স্পষ্ট করেছেন যে ক্রিমিয়া আর কখনোই ইউক্রেনের কাছে ফিরে আসবে না। তিনি আরও দাবি করেছেন, রাশিয়া ২০১৪ সালে অবৈধভাবে যেভাবে ক্রিমিয়া দখল করেছিল, তা ‘একটি গুলিও ছোড়া ছাড়াই’ হয়েছিল। যদিও এটি সম্পূর্ণ ভুল এবং আমি আগেই ব্যাখ্যা করেছি কেন তা সত্য নয়।
ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য-স্টারমার : ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসাবে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে প্রয়োজনে ব্রিটিশ সেনা ‘মাঠে নামানো হবে’। ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ও তার মিত্ররা ‘আশ্বাসমূলক বাহিনী’ মোতায়েন করতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত রয়েছি ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা পাঠাতে-একদিকে ইউক্রেনীয়দের আশ্বস্ত করতে এবং অন্যদিকে নিরাপদ আকাশ, নিরাপদ সমুদ্র এবং ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে পুনর্গঠনের জন্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার পথ প্রশস্ত করায় আমরা তা স্বাগত জানাই।’
যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করব-লিন্ডসে গ্রাহাম : যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছেন, পুতিন যদি সুষ্ঠু ও সম্মানজনক উপায়ে যুদ্ধ শেষ না করেন, তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করার হুমকি দিতে হবে। ফক্স নিউজ-এ তিনি আরও বলেন, যেসব দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনে তাদের ওপর কঠিন শুল্ক বসানো এই কৌশলের প্রধান অংশ।
রুশ হামলায় ইউক্রেনে নিহত ১০ জন : রাশিয়ার হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘ইচ্ছাকৃত’ এবং ‘কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে অপমানিত করার’ বলে ব্যাখা করেছেন। জেলেনস্কি আরও বলেছেন, রাশিয়াকে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য কোনোভাবেই পুরস্কৃত করা উচিত নয়।