Google Alert – বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানান, চলমান তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত শাহীনুল ছুটিতে থাকবেন, আর তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে শাহীনুল ইসলামের ছুটিতে পাঠানোর দাবি জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন একজন ডেপুটি গভর্নর এবং দু’জন নির্বাহী পরিচালক। তাদের সহায়তা করবে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো।
সোমবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি আপত্তিকর ভিডিওর সূত্র ধরে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যদিও শাহীনুল ইসলাম ভিডিওটিকে ভুয়া বলে দাবি করেন, প্রাথমিক যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ভিডিওর সত্যতা পেয়েছে।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত পরিবহন ব্যবসায়ী খন্দকার এনায়েত উল্লাহর অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংকের তদন্ত কমিটিও এই অভিযোগ খতিয়ে দেখবে।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিএফআইইউ এনায়েত উল্লাহ ও তার পরিবারের মালিকানাধীন ৫০টি অ্যাকাউন্টে থাকা ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংক আল-ফালাহর চারটি অ্যাকাউন্ট পুনরায় ফ্রিজ না করে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। আদালতের আদেশে ওই টাকার হিসাব যাচাই করে দুদক জানতে পারে, প্রকৃত অর্থ রয়েছে ১০১ কোটি টাকা। বাকি অর্থ উত্তোলনের অনুমতি কীভাবে দেওয়া হলো, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সীমিত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়, এনায়েত উল্লাহর ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এখানে কোনো অনৈতিকতা নেই। আর ভিডিও নিয়ে বলেন, “কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে হেয় করার জন্য মিথ্যা ও মনগড়া কিছু ছড়িয়েছে।”
জানা গেছে, ভিডিওটি প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে ছড়ালেও সোমবার তা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যার পর বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং তদন্তে নামে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
২০২৩ সালের আগস্টে বিএফআইইউর তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর দীর্ঘদিন পদটি শূন্য থাকার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে শাহীনুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যদিও গভর্নরের নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটির তালিকায় তার নাম ছিল না। তাকে নিয়োগ দেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক সুপারিশ ছিল- এমন আলোচনাও রয়েছে।