Google Alert – বাংলাদেশ
নজিরবিহীন লুটপাটে নাজুক অবস্থায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। গ্রাহকের আমানত ফেরত দেয়ার সক্ষমতাও হারিয়েছে অনেকে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় শরীয়াহভিক্তিক ৫টি ব্যাংক। বিতরণ করা ঋণের ৫০ থেকে ৯৮ শতাংশই খেলাপি এসব ব্যাংকের।
সবচেয়ে বেশি খেলাপি ইউনিয়ন ব্যাংকের। এরপরে আছে ফার্স্ট সিকিউরিটি, এসআইবিএল, গ্লোবাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সহায়তা নিয়েও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি এসব ব্যাংক। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে একীভূতকরণের। সম্পদ মূল্যায়নসহ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে প্রাথমিক কার্যক্রম। পরবর্তী প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সরকারের সাথে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, সরকারের সম্মতির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। যেহেতু এখানে একটা বাজেট সহায়তা লাগবে, সেই আলোচনাটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যখন এটাতে সরকার সম্মত হবে যেহেতু বাজেটের বিষয়ে সরকার জড়িত; তখন বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেবে যে আমরা এই একীভূতকরণ করবো। সিদ্ধান্ত নেয়ার পর একীভূতকরণ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াগুলো শুরু করা হবে।
প্রথম ধাপে একীভূত করা হবে শরিয়াহভিত্তিক ৫ ব্যাংক। ধারণা করা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে দরকার হতে পারে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। যদিও এসব চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বললেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে যেটা হচ্ছে সেটা হলো পর্যালোচনা, প্রক্ষেপণ, তার সিমুলেশন করছে; অনুমানের ভিত্তিতে ফিগারটা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু এগুলো অনুমানিভত্তিক, বিভিন্ন বিষয় পরিবর্তন করে একটা অঙ্ক দাঁড় করাবে। যখন একটা অঙ্কে সরকার সম্মত হবে যে, ঠিক আছে এ পরিমাণ বাজেট সহায়তা থেকে এ পরিমাণ টাকা দিতে পারবো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একীভূত করা ছাড়া দুর্বল ব্যাংক ঘুরে দাঁড়নোর কোনও সুযোগ নেই। তবে ব্যাংক একীভূতকরণের অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। প্রতিটা ধাপই সতর্কতার সাথে এগোতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট পথনকশা থাকা দরকার বলেও মনে করেন তারা।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, কিছু প্রক্রিয়াগত ধাপ থাকে সেগুলোকে বাইপাস করে যাওয়া যায় না। সেগুলো করতেও হয়তো একটা সময় থাকে। সেই সময়টাই হয়তো নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কালক্ষেপনের কোনও সুযোগ নেই। কারণ, যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে সেটা কার্যকর করবে এবং এটা না করলে আসলে এই ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য আর পুনরুদ্ধার করা যাবে না। সুস্পষ্ট পথরেখা দিয়ে তারপর… যাতে কি না পরবর্তীতে মনে না হয় যে তাড়াহুড়া করলাম, এটার মধ্যে কিছু ত্রুটি রয়ে গেলো, কিছু দুর্বলতা রয়ে গেলো সেটা যাতে না হয়।
দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে আমানতের সুরক্ষার পাশাপাশি এসব ব্যাংকের কর্মীদের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
/এমএন