নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আফগানিস্তানের প্রতি পাকিস্তানের আহ্বান

Google Alert – সশস্ত্র

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর বিরুদ্ধে কার্যকর ও যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিতে  আফগানিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ।

বুধবার কাবুলে আয়োজিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও পাকিস্তানের ইসহাক ডার বৈঠকে যোগ দিতে কাবুল পৌঁছান। তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর এটিই ওয়াং ই-এর প্রথম আফগানিস্তান সফর।

ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের বাইরে আফগান নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওয়াং ই আফগান ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আখুন্দকে বলেন, বেইজিং আশা করে তালেবান সরকার চীনের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেবে।

অন্যদিকে আফগান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠকে ইসহাক দার আফগান ভূখণ্ডে টিটিপি, বিএলএ এবং মজিদ ব্রিগেডের উপস্থিতির বিষয়টি তোলেন। 

ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতিকে স্বাগত জানালেও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ইসহাক দার আফগান মাটিকে ব্যবহার করে পাকিস্তানে বেড়ে চলা সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, কাবুলকে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট ও যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আফগান ভূখণ্ড অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত হতে দেওয়া হবে না। তবে ইসলামাবাদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, তালেবান সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ায় পাকিস্তানের হতাশা বাড়ছে।

যদিও নিরাপত্তা ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসহাক দার, তিনি এবং ওয়াং ই উভয়েই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক গতিপথে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। সম্প্রতি দুই দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধি পর্যায় উন্নীত করে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানানো হয়।

আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি বলেন, অঞ্চলটিতে সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। পারস্পরিক আস্থা ও বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে এগুলো কাজে লাগানো সম্ভব। তিনি দাবি করেন, আফগানিস্তান এখন তার অর্থনীতিকে পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি করেছে এবং দেশটিকে শুধুমাত্র নিরাপত্তা সংকটের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে আরও দৃঢ় হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা শুধু বাণিজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, অবকাঠামোসহ নানা খাতে বিস্তৃত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আফগানিস্তান স্থিতিশীলতার পথে এগোবে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডর নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।

ইসহাক দার বলেন, আফগানিস্তান-চীন-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় সংলাপ বিদ্যমান সম্পর্ক মজবুত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের উন্নতির পথ তৈরি করছে। তার মতে, এ সহযোগিতা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন দ্বার খুলে দেবে।

বৈঠকে তিন দেশই আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে এবং বাণিজ্য ও ট্রানজিটের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে যৌথ প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো এমন সময়ে, যখন আফগানিস্তান তার অর্থনীতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণে মনোযোগ দিচ্ছে। এর মধ্যে পাকিস্তান ও চীন—দু’টি বড় প্রতিবেশীর অংশগ্রহণ কাবুলের জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *