Bangla Tribune
প্রথমবারের মতো গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে জাতিসংঘের একটি সংস্থা। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপত্যকার পাঁচ লাখের বেশি মানুষ এখন ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) বলেছে, গাজা শহর ও এর আশপাশের এলাকায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিস অঞ্চলও বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।
আইপিসি তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, গাজার দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণরূপে মানুষের তৈরি এবং এটি প্রতিহত করা সম্ভব। বিতর্কের সময় শেষ হয়ে গেছে। দুর্ভিক্ষ উপস্থিত, এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
সংস্থাটি আরও সতর্ক করে বলেছে, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আর কোনও বিলম্ব হলে, এমনকি কয়েক দিন দেরি হলে, দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর হার অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে।
তবে ইসরায়েল আইপিসির এ মূল্যায়ন প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির সামরিক সংস্থা কো-অর্ডিনেশন অব গভর্নমেন্ট অ্যাকটিভিটিস (কোগ্যাট) দাবি করেছে, প্রতিবেদনটি মিথ্যা ও হামাসের দেওয়া আংশিক ও পক্ষপাতদুষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি।
কোগ্যাট আরও বলেছে, আইপিসি গাজায় ইসরায়েলের বিভিন্ন মানবিক প্রচেষ্টা উপেক্ষা করছে।
আইপিসি সরাসরি দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করে না। তবে তাদের বিশ্লেষণকে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, সাহায্য গোষ্ঠী ও বিভিন্ন দেশের সরকারের সমন্বয়ে গঠিত এই সংস্থাটি খাদ্য নিরাপত্তার বৈশ্বিক মানদণ্ড নির্ধারণ করে থাকে।
তাদের ৫৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তাৎক্ষণিক ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। নাহলে গাজার দুর্ভিক্ষ আরও গভীর হয়ে প্রাণহানি বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এর জবাবে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং গাজায় চলমান এই মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।