প্রধান উপদেষ্টার বিচক্ষণতা

Google Alert – প্রধান উপদেষ্টা

রোববার প্রধান উপদেষ্টা তিনটি বড় দল-যথাক্রমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো তখন, যখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দোলাচল তৈরি হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এই আশাবাদ দৃঢ় হয়েছে যে, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে বিএনপির শতভাগ সমর্থন থাকলেও জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি নির্বাচন প্রশ্নে কিছু শর্ত আরোপ করেছে। তাদের এসব শর্তের নিষ্পত্তি হবে কি না, হলে কীভাবে হবে-এসব প্রশ্ন সরিয়ে রেখে আশা করা যায়, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা এমনকি এ কথাও বলেছেন, কেউ যদি নির্বাচনের বিকল্প নিয়ে ভাবে, তাহলে সেটা জাতির জন্য হবে বিপজ্জনক। আমরাও মনে করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা না গেলে সংকট ঘনীভূত হবে।

অতিসম্প্রতি দেশে এমন কিছু ঘটেছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকেই নির্দেশ করে। ওদিকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে জামায়াত ও এনসিপি যেসব শর্ত দিয়েছে, তা সংকটের আরেকটি মাত্রা। এমন অবস্থায় রোববারের বৈঠকটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন অনুষ্ঠানে তার যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তাতে অবশ্য হতাশার কিছু নেই। হতাশা একেবারে থাকবেই না, যদি রাজনৈতিক দলগুলো এমন ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, যাতে নির্বাচনটি যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হতে আর বাধা থাকবে না। এটা তো ঠিক, একটি অন্তর্বর্তী সরকার বছরের পর বছর দেশ শাসন করতে পারে না, যদিও সরকারটি গঠিত হয়েছিল জনগণের অভিপ্রায়ে। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের মর্মকথা ছিল নাগরিকদের মতপ্রকাশের সুযোগ তৈরি করা এবং একই সঙ্গে তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পাওয়া গেছে; কিন্তু ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ এখনো আসেনি। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর সময় আগামী ফেব্রুয়ারি। সময়টি আর দীর্ঘায়িত করা উচিত হবে না। এর আগেই অবশ্য জুলাই সনদ এবং সংস্কারগুলো নিয়ে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে।

বৃহত্তম দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য শক্তির ষড়যন্ত্র চলছে। তার এই আশঙ্কা অমূলক প্রমাণ করতে হবে। আমরা দেখছি, বিএনপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে সরকারকে সহযোগিতা করে চলেছে। অন্যান্য দলকেও একই সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ। দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে দেশের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং এমন কিছু করা যাবে না, যা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। গত রেজিমে আমরা দেখেছি, দলীয় স্বার্থে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। একই দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমান সময়ে পোষণ করলে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের যে গৌরব, তা ম্লান হয়ে পড়বে। সবশেষে আমরা বলব, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই এবং তা ঘোষিত ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *