যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযান: হুন্দাই কোম্পানির কয়েকশ কর্মী আটক

চ্যানেল আই অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানি হুন্দাইয়ের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এই কারখানা থেকে আটকদের বেশিরভাগই কোরিয়ান নাগরিক। তারা সেখানে গত এক বছর ধরে বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরির কাজ করছিল।

বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর কোনো কর্মক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে বড় অভিযান।

শনিবার ৬ সেপ্টেম্বর বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এই অভিযানের জন্য ‘উদ্বেগ ও ক্ষোভ’ প্রকাশ করে দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, এই অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় তারা ঘটনাস্থলে তাদের কূটনীতিকদের পাঠাচ্ছেন এবং কোরিয়ান নাগরিকদের অধিকারের ক্ষেত্রে ‘চরম সতর্কতা অবলম্বন’ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করতে সিউলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, বেআইনিভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বন্ধ এবং অন্যান্য গুরুতর ফেডারেল অপরাধের অভিযোগের কারণে এজেন্টরা একটি তল্লাশি পরোয়ানা কার্যকর করেছে।

আটলান্টায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনের দায়িত্বে থাকা স্পেশাল এজেন্ট স্টিভ শ্রাংক শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি হঠাৎ কোনো অভিবাসন অভিযান ছিল না। বরং এটি বহু মাস ধরে চলমান একটি তদন্ত।

তিনি আরও বলেন, এই অপরাধের অনুসন্ধান চালানোর জন্য বিচার বিভাগীয় অনুমতি পেতে আমরা বহু মাস ধরে প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, সাক্ষাৎকার নিয়েছি, নথি সংগ্রহ করেছি এবং সেই প্রমাণ উপস্থাপন করেছি।

এই অভিযান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ অগ্রাধিকার পাওয়া দুটি বিষয়ের মধ্যে সম্ভাব্য উত্তেজনা বা বিরোধও তৈরি করেছে। আর তা হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অবৈধ অভিবাসন দমন। এছাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপরও এই ঘটনা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

শুক্রবার ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তারা অবৈধ অভিবাসী ছিল এবং আইসিই (অভিবাসন কর্তৃপক্ষ) কেবল তার কাজ করছিল।

সিউলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একজন প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চাই এবং আমরা একটি দুর্দান্ত, স্থিতিশীল কর্মীবাহিনী চাই। তিনি বলেন, এরা (কর্মীরা) এমন লোক যারা বাইডেনের মাধ্যমে এসেছে, তারা অবৈধভাবে এসেছে।

অভিবাসন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অভিযানে অবৈধভাবে দেশে থাকা বা বেআইনিভাবে কাজ করা প্রায় ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে ৩০০ জন কোরিয়ান নাগরিকও বলে জানা গেছে।

এক বিবৃতিতে, হুন্দাই মোটর কোম্পানি বলেছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বোঝার জন্য কাজ করছে। আজ পর্যন্ত, আমরা এটা নিশ্চিত হয়েছি যে আটককৃতদের কেউই সরাসরি হুন্দাইয়ের নিয়োগ করা কর্মী নন।

রয়টার্স জানিয়েছে, এই ঘটনায় বিশাল জায়গা জুড়ে নির্মিত হুন্দাইয়ের বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরির কারখানাটির উৎপাদন প্রভাবিত হয়নি। তবে, ব্যাটারি তৈরির জন্য কারখানাটির যৌথ অংশীদার, দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি এনার্জি সলিউশনস সাইটটিতে নির্মাণ কাজ স্থগিত রেখেছিল।

ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচেষ্টা শুরু করেন যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের ধরা হচ্ছে, তাদেরকে আটককেন্দ্রে রাখা হচ্ছে এবং প্রায়শই তাদের নির্বাসিত করা হচ্ছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *