ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলার আশংকা, মার্কিন ঘাঁটিতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন

Google Alert – সশস্ত্র

লাতিন আমেরিকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেই পুয়ের্তো রিকোর ঘাঁটিতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলার শঙ্কা বেড়েছে। খবর আল জাজিরা।

ভেনেজুয়েলার ভেতরে সক্রিয় ড্রাগ কার্টেলগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা হিসেবেই এ অস্ত্র মোতায়েন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এর অংশ হিসেবে ১০টি আধুনিক এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান পুয়ের্তো রিকোর একটি বিমানঘাঁটিতে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন একাধিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, লাতিন আমেরিকার এসব মাদকচক্রকে”নার্কো-টেরোরিস্ট” বা ‘মাদক-সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে ওয়াশিংটন।

এদিকে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন ভেনেজুয়েলা ও লাতিন আমেরিকায় সহিংসভাবে সরকার পরিবর্তনের পরিকল্পনা পরিত্যাগ করে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সার্বভৌমত্ব, শান্তির অধিকার ও স্বাধীনতাকে সম্মান করতে হবে। মাদুরো যোগ করেন, ‘আমি ট্রাম্পকে সম্মান করি। আমাদের মধ্যে যে কোনো মতপার্থক্য কখনোই সামরিক সংঘাতে গড়ানো উচিত নয়। ভেনেজুয়েলা সব সময় আলোচনা ও সংলাপের জন্য প্রস্তুত।’

মার্কিন হুমকির মুখে মাদুরো ভেনেজুয়েলার প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার সেনাকে সতর্কাবস্থায় রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, দেশটির রিজার্ভ বাহিনী ও মিলিশিয়ার সংখ্যা ৮০ লাখের বেশি। এই সপ্তাহের শুরুতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মাদুরো বলেন, যদি ভেনেজুয়েলার ওপর হামলা হয়, দেশটি সঙ্গে সঙ্গেই সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে অগ্রসর হবে।

ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নেই। তবে তিনি ভেনেজুয়েলার সাম্প্রতিক নির্বাচনকে অত্যন্ত অস্বাভাবিক নির্বাচন আখ্যা দেন।

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের খবর এমন সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলবর্তী দক্ষিণ ক্যারিবিয়ান এলাকায় বড় ধরনের নৌবহর মোতায়েন করেছে। সেখানে রয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, বিপুলসংখ্যক মেরিনস ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত দ্রুত আক্রমণাত্মক সাবমেরিন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভেনেজুয়েলার দুইটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মার্কিন গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস জেসন ডানহামের কাছাকাছি উড়ে গিয়ে অত্যন্ত উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ডেস্ট্রয়ারসহ অন্তত সাতটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ বর্তমানে ওই এলাকায় রয়েছে। সেখানে মোতায়েন আছে প্রায় ৪,৫০০ নাবিক ও মেরিন সেনা।

ট্রাম্প পরে সতর্ক করে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার যুদ্ধবিমান যদি মার্কিন নৌজাহাজকে হুমকির মুখে ফেলে, তবে মার্কিন বাহিনীকে সেগুলো গুলি করে নামানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ক্যারিবিয়ানে একটি স্পিডবোট উড়িয়ে দেয়। ট্রাম্প দাবি করেছেন, সেটি ভেনেজুয়েলার অপরাধী সংগঠন ত্রেন দে আরাগুয়ার মালিকানাধীন ছিল, যেটিকে তিনি মাদুরোর সঙ্গে যুক্ত করেছেন। এই হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে ট্রাম্প জানান। তবে কারাকাস এটিকে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যা আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরাও এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই সপ্তাহে ট্রাম্পের সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন। বুধবার মেক্সিকো সফরে তিনি বলেন, ‘মাদকচক্রকে থামানোর একমাত্র উপায় হলো তাদের উড়িয়ে দেওয়া, তাদের ধ্বংস করা।’ রুবিও আরো বলেন, ‘আপনি যদি কোকেন বা ফেন্টানিল ভর্তি নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আসেন, তবে আপনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি।’

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *