জেগে উঠেছে ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি

Samakal | Rss Feed


জেগে উঠেছে ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি

বিশ্ব

কলকাতা প্রতিনিধি

2025-09-26

জেগে উঠেছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ব্যারেন আইল্যান্ডে ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ১৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে আন্দামান সাগরে অবস্থিত ব্যারেন আইল্যান্ড।

আন্দামান-নিকোবর প্রশাসন জানিয়েছে, ২০ সেপ্টেম্বর এই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ঘুম ভেঙে জেগে উঠে। প্রবল বিস্ফোরণের জেরে আন্দামানে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আশেপাশের এলাকায় কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

জনবসতিহীন ব্যারন আইল্যান্ডের আগ্নেয়গিরির সেই দৃশ্য ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে তপ্ত, লাল লাভা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসছে এবং আগ্নেয়গিরির চূড়া থেকে ঘন ধোঁয়ার স্রোত বের হচ্ছে।

দাবি করা হচ্ছে, গত ১৩ ও ২০ সেপ্টেম্বর দুই দফায় স্ট্রম্বোলিয়ান ধরনের অগ্নুৎপাত ঘটেছে। ফলে অল্পমাত্রায় লাগাতার লাভা ও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায় আগ্নেয়গিরিটি থেকে, যা বৃহস্পতিবারও সক্রিয় রয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে। পোর্ট ব্লেয়ার বা আশেপাশের দ্বীপগুলির জন্য কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।

পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, যদিও এই অগ্ন্যুৎপাতগুলো আপাতত ক্ষতিকর নয়, তবে ছাই এবং গ্যাস কাছাকাছি সামুদ্রিক প্রাণী ও প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া বিমান চলাচলের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভূতাত্ত্বিক দপ্তর নজরদারি চালাচ্ছে।

ভারতের আন্দামান-নিকোবর চূড়ান্ত অংশটি একটি ক্লাসিক সাবডাকশন জোন, এই আগ্নেয়গিরিটিও টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষজনিত সাবডাকশন জোনে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় প্লেট বার্মা প্লেটের নিচে প্রবেশ করছে। সেই চাপ থেকেই ম্যাগমা উপরে উঠে আসে এবং অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।

আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের ৮ দশমিক ৩৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত ব্যারন দ্বীপ আসলে এক আগ্নেয় দ্বীপ। এটি সম্পূর্ণভাবে আগ্নেয়গিরির উপাদানে তৈরি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩৫৪ মিটার। এর নিকটতম জনবসতিপূর্ণ স্থান হল স্বরাজ দ্বীপ (হ্যাভলক দ্বীপ) এবং নরকোন্ডাম দ্বীপমানুষের বসতি না থাকলেও এখানে বন্যপ্রাণী এবং পাখির বাস ব্যারন দ্বীপে।

ইতিহাস বলছে, ব্যারন দ্বীপে প্রথম অগ্ন্যুৎপাত রেকর্ড করা হয় ১৭৮৯ সালে। এর পরে ১৯৯১ সালে বড় অগ্ন্যুৎপাত হয়, যা দীর্ঘ সময় সক্রিয় ছিল। ২০১৭ ও ২০১৮ সালেও আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় হয়েছিল।

জনবসতিহীন ও বন্ধ্যা হলেও এই দ্বীপ বিজ্ঞানীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ক্ষেত্র। বন দপ্তরের বিশেষ অনুমতি নিয়ে, দূর থেকে ব্যারেন দ্বীপের জীবন্ত আগ্নেয়গিরিটিকে কিন্তু দেখে আসা যায়। জনশূন্য, প্রায় রুক্ষ, পাথুরে দ্বীপটির প্রতিকূল পরিবেশে এখনও কিছু পাখি, বাদুড়, ইঁদুর ও ছাগলের দেখা মেলে। যদিও কাউকে দ্বীপটিতে নামার অনুমতি দেওয়া হয় না।

© Samakal

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *