Google Alert – সেনাবাহিনী
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করা মার্কিন সামরিক বাহিনীর শত শত জেনারেল এবং অ্যাডমিরালকে জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে তলব করা হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ আগামী সপ্তাহে ভার্জিনিয়ায় এই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে ডেকেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এত বড় পরিসরে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের এমন আকস্মিক সমাবেশ অত্যন্ত অস্বাভাবিক। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের উদ্দেশ্য বা আলোচনার এজেন্ডা স্পষ্ট করা হয়নি।
মার্কিন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল তা নিশ্চিত করেছেন। তবে কেন এত জরুরি ভিত্তিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল ও নৌবাহিনীর অ্যাডমিরালদের এই বৈঠকে ডাকা হলো, সে বিষয়ে তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনীতে প্রায় ৮০০ জেনারেল ও অ্যাডমিরাল রয়েছেন, যাদের অনেকেই সংবেদনশীল বিদেশি ঘাঁটিতে হাজার হাজার সেনার দায়িত্বে আছেন। সাধারণত এসব কর্মকর্তাদের সময়সূচি কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে।
একজন সামরিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এখন সবাই তাদের সময়সূচি বদলাতে হিমশিম খাচ্ছেন এবং ভাবছেন তাদের সেখানে যাওয়া বাধ্যতামূলক কি না।’ মুখপাত্র পারনেল শুধু বলেছেন যে, ‘আগামী সপ্তাহের শুরুতেই যুদ্ধমন্ত্রী তার জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন।’
হোয়াইট হাউসে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বৈঠককে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে বলেন, ‘আমি এটা ভালোবাসি। আমার কাছে দারুণ মনে হচ্ছে। জেনারেল আর অ্যাডমিরালদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা ভালো।’ জাতীয় নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের এভাবে সরিয়ে নেওয়া নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, ট্রাম্প সেটিকে গুরুত্ব দিতে চাননি।
ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও এই সমালোচনাকে গুরুত্বহীন হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘যেসব জেনারেল প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়ে প্রেসিডেন্টের অধীনে কাজ করেন, তাদের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাটা অস্বাভাবিক নয়। সাংবাদিকরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, সেটাই বরং অদ্ভুত।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প এবং হেগসেথ প্রতিরক্ষা দপ্তরে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে যৌথবাহিনী প্রধান জেনারেল সিকিউ ব্রাউনসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন। মে মাসে ট্রাম্প চার-তারকা জেনারেলের সংখ্যা ২০ শতাংশ এবং পুরো সেনাবাহিনীতে জেনারেল ও ফ্ল্যাগ অফিসারের সংখ্যা ১০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ বহুত্ববাদ বা বৈচিত্র্য বিষয়ক উদ্যোগও বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, সেনাবাহিনীকে এখন ‘প্রাণঘাতী শক্তি বৃদ্ধি’ এবং ‘যোদ্ধা মনোভাব পুনরুদ্ধারে’ মনোযোগী হতে হবে। চলতি মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্দেশে প্রতিরক্ষা দপ্তরকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ বা যুদ্ধ দপ্তর হিসেবে উল্লেখ করার নীতি ঘোষণা করেন, যা ১৯৪৯ সালের আগে পর্যন্ত এই নামেই পরিচিত ছিল।
সূত্র: আল জাজিরা