পশ্চিম তীর-জর্ডান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করল ইসরায়েল, আটকা ফিলিস্তিনিরা

Google Alert – সেনা

ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং কাছেই জর্ডানের মধ্যকার একমাত্র আন্তর্জাতিক সংযোগ পথ ‘আলেনবি ব্রিজ ক্রসিং’ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি কার্যত আটকা পড়ে গেছেন।

বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আলেনবি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সেতুটি তদারককারী ইসরায়েলি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশে’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে ক্রসিংটি বন্ধের কোনও কারণ জানানো হয়নি। ক্রসিং বন্ধ হওয়ায় পশ্চিম তীরে যারা বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তারা আটকে গেছেন। অন্যদিকে, যারা বিদেশে আছেন, তারাও আর বাড়ি ফিরতে পারছেন না।

কয়েকদিন আগে এই সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছে এক জর্ডানি বন্দুকধারীর গুলিতে দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়। পরে ওই বন্দুকধারীও নিহত হন। এই ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য আলেনবি সেতু বন্ধ থাকলেও পরে আবার খুলে দেওয়া হয়েছিল।

এখন আবার তা বন্ধ করা হল। ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মুস্তফা বারঘুতি বিবিসি-কে বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’, যা পশ্চিম তীরের মানুষকে “কারাগারে আটকে রাখা” এবং তাদের একমাত্র বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ার শামিল।

জর্ডানের রাজধানী আম্মান ও জেরুজালেমের মাঝামাঝি আলেনবি সেতু- যাকে ‘কিং হুসেইন ব্রিজ’ও বলা হয়- এটি পশ্চিম তীর ও জর্ডানের মধ্যকার একমাত্র দাপ্তরিক সীমান্তপথ।

এটি পশ্চিম তীরের একমাত্র প্রবেশদ্বারও, যেখানে ফিলিস্তিনিদেরকে সরাসরি ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত পাড়ি দিতে হয় না। ইসরায়েলের অন্য বিমানবন্দর বা সীমান্ত দিয়ে চলাচল ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রায় পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

তাই আলেনবি সেতুটি পিশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের জন্য বহির্বিশ্বের সঙ্গে সংযোগের একমাত্র ভরসা। ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ বারঘুতি বলেন, “এই সীমান্ত সেতু বন্ধ হওয়ায় শত-সহস্র পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে, যারা সাধারণত জর্ডানের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।

“হাজার হাজার মানুষ জর্ডানে আটকে আছেন, তাদের হোটেলে থাকার সামর্থ্য নেই। তারা বাইরে থাকতে পারছেন না। আবার পশ্চিম তীরে সন্তান নিয়ে অনেক মা আছেন যাদের ফেরা দরকার, তারা আসতে পারছেন না।

২৩ বছর বয়সী বেথলেহেমের মেডিকেল শিক্ষার্থী ম্যাক্সিম জিয়াকামান জানান, জার্মানিতে হৃদযন্ত্রের শল্যচিকিৎসায় এক মাসের প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার সুযোগ হারাচ্ছেন তিনি।

“শনিবার আমার ফ্লাইট। আজ আম্মান যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এটা আমার ভবিষ্যতের জন্য বড় সুযোগ ছিল। এখন সব ভেস্তে যাচ্ছে। এটা ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক,” বলেন তিনি।

জর্ডানে আছে ২০ লাখেরও বেশি নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থী। আর জর্ডানের জনসংখ্যার ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভুত।

জর্ডানের সঙ্গে ১৯৯৪ সালের শান্তি চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে। তবে জর্ডান ফিলিস্তিনের প্রতি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের সমালোচকও।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *