গৌরীপুরে কলেজ অধ্যক্ষকে মারধর, জড়িতদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম

দেশ রূপান্তর

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ভূটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ধেরুয়া কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনসহ অন্যদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদকে ধাক্কা দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিচ্ছেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভূটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে মানববন্ধন এবং ভূটিয়ারকোনা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অধ্যক্ষের উপর হামলাকে ন্যাক্কারজনক ও শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহানিকর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৪-১৫ জন সশস্ত্র ব্যক্তি কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে তাঁকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারে। পরে তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে জোরপূর্বক কলেজ থেকে বের করে দেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। তিনি এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেখানে কীভাবে উপস্থিত ছিলেন, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আমীন পাপ্পা বলেন, ঘটনার ভিডিও তিনি দেখেছেন এবং মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

এদিকে, কলেজের সহকারী শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানে দুটি পক্ষ তৈরি হওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অধ্যক্ষের সাথে যা ঘটেছে, তা একটি ঘৃণিত কাজ এবং এর বিচার হওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই মাস থেকে কলেজের নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদের অপসারণ দাবি করে কিছু শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের একাংশ আন্দোলন শুরু করে। গত ৫ আগস্ট তাঁকে সরিয়ে সাজেদুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়, তবে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আবার গোলাম মোহাম্মদকে দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই একটি পক্ষ তাঁর বিরোধিতা করে আসছিল।

মাওহা ইউনিয়ন জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ নিয়োগ বাণিজ্যসহ ১৩টি অভিযোগে অভিযুক্ত, তাই তাঁকে মানুষ সহজে মেনে নেয়নি। তবে তিনি আনোয়ার হোসেনের কাজটির বিরোধিতা করেছেন বলে দাবি করেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *