আরসা-আরএসও হামলায় বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের মদদের অভিযোগ তুলল আরাকান আর্মি : সংবাদ অনলাইন

Google Alert – সামরিক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরাকান আর্মি (এএ) অভিযোগ করেছে, তাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর হামলার পেছনে বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তার হাত রয়েছে।

১৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাখাইনের মংডু টাউনশিপে আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) ও আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) যৌথভাবে এএ-এর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এ হামলায় ‘বাংলাদেশি কর্মকর্তার মদদ’ ছিল বলে দাবি করেছেন আরাকান আর্মির প্রধান তুন মাইয়াত নায়িং।

তিনি বলেন, মায়ানমার সরকারের কাছ থেকে দখলে নেওয়া এলাকায় শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। “বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা সীমান্তের ওপারের বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছেন এবং হামলা চালাতে নির্দেশ দিচ্ছেন।”

আরাকান আর্মির কমান্ডার ইন চিফের ভাষ্য, আগে এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ হত মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে। কিন্তু এখন তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছে এবং এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য তাদের হাতে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ‘মুসলিম বিদ্রোহীদের’ সীমান্তসংলগ্ন তাউংপিও এলাকায় হামলার নির্দেশ দিচ্ছেন। সেটা সম্ভব না হলে তাউংপিওর উত্তরের এএ ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। “যে অস্ত্রই থাকুক, সেটি দিয়েই আমাদের ওপর হামলা চালাতে বলা হচ্ছে।”

এসব অভিযোগ নিয়ে মায়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে বক্তব্য চাওয়া হলেও পাওয়া যায়নি। একইভাবে আইএসপিআর বা বিজিবির বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

আরাকান আর্মির দখল ও অভিযোগ

বর্তমানে রাখাইনের প্রায় পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। তাদের দখলকৃত এলাকার মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন বুথিয়াডং ও মংডু টাউনশিপও রয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর আরেক বিবৃতিতেও আরাকান আর্মি একই ধরনের অভিযোগ তোলে।

সে বিবৃতিতে বলা হয়, ভঙ্গুর সীমান্ত দিয়ে আরসা ও আরএসও যোদ্ধারা মংডুতে অনুপ্রবেশ করছে। তারা অমুসলিম লোকজনকে অপহরণ ও হত্যা করছে কিংবা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তুলে নিচ্ছে। পাশাপাশি নানা অপ্রচারও চালাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে, এসব বিদ্রোহী রাখাইনে প্রবেশের পর সাধারণ মানুষকে হত্যা করে তাদের আরাকান আর্মির পোশাক পরিয়ে দাবি করছে যে, নিহতরা এএ-এর সঙ্গে লড়াই করেছে। কিন্তু নিহতরা আসলে বেসামরিক মানুষ।

আরসা মূলত নর্দান রাখাইনে সক্রিয় একটি গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হামলার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে একটি হিন্দু গ্রামে হামলা এবং বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে হামলার অভিযোগ উল্লেখযোগ্য। মায়ানমার ও মালয়েশিয়া সরকার ইতোমধ্যে আরসাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত বছর থেকে আরসার যোদ্ধারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা মায়ানমারের জান্তা সরকারের হয়ে কাজ করছে।

অন্যদিকে আরএসও একটি সশস্ত্র ও রাজনৈতিক সংগঠন, যার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৮২ সালে রাখাইনে সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর তারা নতুন করে অস্ত্র হাতে পায় এবং জান্তা সরকারের হয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। তবে আরএসও বরাবরই আরসার বিরোধিতা করে এসেছে।

আরএসওর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে তারা শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের জোর করে যোদ্ধা হিসেবে ব্যবহার করছে।

রাখাইনে বিভিন্ন পক্ষের সংঘাত অব্যাহত থাকায় সেখানে বিচ্ছিন্ন এলাকায় ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে আরাকান আর্মি। বর্তমানে রাখাইনের ১৭টির মধ্যে ১৪টি প্রশাসনিক এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই এএ-এর দখলে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *