যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির

Google Alert – সামরিক

শনিবার থেকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানকে উত্তেজনা না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং আলোচনায় ফেরার আহ্বান করেছে।


এই তিন দেশ জানিয়েছে, তেহরানের ধারাবাহিকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি জোরদার করা এবং সহযোগিতা না করার কারণে তাদের সামনে ‘শেষ অবলম্বন’ হিসেবেই কঠোর নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।


তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা ইরানকে কোনো উত্তেজনামূলক পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান জানাই। নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল মানেই কূটনীতির শেষ নয়। ”


ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান গত সপ্তাহে জোর দিয়ে বলেছেন, তার দেশ পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কোনো ইচ্ছা রাখে না এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে ‘অন্যায়, অবিচার ও অবৈধ’ বলে নিন্দা করেছেন।


শনিবার রাত ১২টা (০০:০০ জিএমটি) থেকে জাতিসংঘের বিস্তৃত অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা ইরানের ওপর ফের কার্যকর হয়। এক দশক আগে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ঐতিহাসিক এক চুক্তির মাধ্যমে যেগুলো তুলে নেওয়া হয়েছিল।


২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ইরান নিষিদ্ধ পারমাণবিক কার্যক্রম জোরদার করে। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন, সমালোচনা করে তিনি বলেন, বারাক ওবামার সময় করা এই যৌথ সমঝোতা পরিকল্পনা (জেসিপিওএ) ছিল ত্রুটিপূর্ণ।


এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ঠেকানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়।


রোববার ভোরে এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপের তিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইরান বারবার এসব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না। তাই আমরা ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করি, যার ফলে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবগুলো আবার কার্যকর হয়। ”


তারা আরও জানান, কূটনৈতিক পথ ও আলোচনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।


বিবৃতিতে ইরানের ব্যর্থতার দিকগুলো উল্লেখ করে বলা হয়, তেহরান প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি, উদ্বেগ মেটায়নি বা সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি, যদিও ব্যাপক সংলাপ হয়েছে।


বিশেষভাবে তারা অভিযোগ করেছে, ইরান জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।


বিবৃতিতে বলা হয়: “ইরান আইএইএ পরিদর্শকদের পুনরায় পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি, এমনকি মজুদ উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের হিসাবও দেয়নি। ”


গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর দেশটি আইএইএ পরিদর্শন স্থগিত করেছিল।


চুক্তি অনুযায়ী ইরানের এসব স্থাপনায় পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শুক্রবার আইএইএ নিশ্চিত করেছে যে পরিদর্শন আবার শুরু হয়েছে। তবে ইরান সতর্ক করেছে, নিষেধাজ্ঞা ফিরলে এই সহযোগিতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।


পেজেশকিয়ান যদিও আগের হুমকি থেকে সরে এসেছেন যে ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে আসবে।


তবে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তাদের সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্বাভাবিক করতে হলে ইসরায়েল থেকে এই নিশ্চয়তা প্রয়োজন যে তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় আর কোনো হামলা হবে না।


তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ইরান যদি সব সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ হস্তান্তর করে তবে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখা হবে। পেজেশকিয়ানের ভাষায়, “আমরা কেন নিজেদের এমন ফাঁদে ফেলব, যেখানে প্রতি মাসেই আমাদের গলায় ফাঁস পরানো হবে?”


শনিবার ইরান ঘোষণা করেছে, তারা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতদের আলোচনার জন্য দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি


এমজেএফ

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *