প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে ড. ইউনূসের আহ্বান 

Kalbela News | RSS Feed

দেশের পরিবর্তন ও পুনর্গঠনে প্রবাসীরা যেন শুধু দর্শক না থেকে সক্রিয় অংশীদার হন, সেই বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তাদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ডা. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখার দিন শেষ। এখন আমরাই খেলব।’

এ সময় তিনি প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা ও বিনিয়োগের সুযোগ সহজ করার লক্ষ্যে ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপেরও উদ্বোধন করেন।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ‘এনআরবি কানেক্ট ডে : এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের সময় উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের করতালির মাধ্যমে ড. ইউনূস দেশ ও জাতি গঠনে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর দেশে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, তা এগিয়ে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রবাসীদের তিনি বাংলাদেশের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে দেশ পুনর্গঠনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য তার সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রবাসীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ২১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে তাদের অবদান অনস্বীকার্য।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তার সফরসঙ্গী হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘ওনারা এ সফরে যোগ দিতে সম্মত হওয়ায় আমাদের আস্থা অনেক বেড়ে গেছে।’

এটি বাংলাদেশের প্রশ্নে সবাইকে এক থাকার একটি ইতিবাচক বার্তা দেয় বলে তিনি মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। এই সফরের অষ্টম দিনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবী অংশগ্রহণ করেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর এটিই ছিল কোনো অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসের সরাসরি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুখোমুখি হওয়ার প্রথম সুযোগ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে এনআরবিরা একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যারা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সূচিত পরিবর্তনগুলো এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের উপস্থাপনা দিয়ে। তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রবাসীদের অবদানে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশেরও বেশি হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।

আশিক প্রবাসীদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রক্রিয়া সম্পর্কেও অবহিত করেন।

এরপর অনুষ্ঠিত হয় ‘ব্রিজিং বর্ডারস : কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াসপোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনা। বিশেষ দূত লুফতে সিদ্দিকী এ আলোচনা পরিচালনা করেন। প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ আরও তিনজন এতে অংশ নেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন পরবর্তী রাজনৈতিক ভিশন নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের সঞ্চালনায় ‘শেপিং টুমরো : দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরেকটি প্যানেল আলোচনা হয়। এতে এনসিপি নেতা তাসনিম জারা, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াত নেতা নাকিবুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *