ঈদের দিনে শোকাতুর শহীদ আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা

Bangla Tribune

ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। আব্দুল্লাহকে ছাড়াই মা-বাবা, ভাই-বোনের এবারের ঈদ কাটছে। তার শোকে ঈদের দিনে কাঁদছেন পরিবারের সদস্যরা। যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল পোর্টথানার বড় আঁচড়া গ্রামের বাড়িতে এখন যেন এক বড় শূন্যতা বিরাজ করছে। 

ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন আব্দুল্লাহ। শুরু থেকেই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।

আব্দুল্লাহর কথা স্মরণ করে কাঁদতে কাঁদতে বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ভাইকে ছাড়া এবারই প্রথম ঈদ করছি। ভাই বাড়িতে আসতো, আনন্দ-উল্লাসে দিন কাটতো। কিন্তু এবারের দিন আমাদের দুঃখ-বেদনার, কান্নার। ছোট ভাই নানা-নানির কবরের পাশে চিরনিন্দ্রায় শায়িত। ভাইয়ের কবর দেখলেই চোখে পানি চলে আসে। প্রতি বছর রমজানে কলেজ ছুটি হলে ভাই বাসায় চলে আসতো। আব্দুল্লাহসহ পরিবারের সদস্যরা মিলে ইফতার করতাম। আজ সকালে ঈদের নামাজের পর আমি বাবা, মেজো ভাইসহ আব্দুল্লাহর  কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ি। আব্দুল্লাহসহ চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের যেন আল্লাহ জান্নাত নসিব করেন। যেসব আহত ভাই রয়েছেন তারা যেন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। দেশবাসীর কাছে এই দোয়া কামনা করছি।’

শহীদ আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া খাতুন বলেন, ‘ঈদের সময় আব্দুল্লাহ ভাই-বোনদের নিয়ে আনন্দে সময় কাটাতো। আজ আমার বুকের ধন নেই। একজন মা বোঝে তার সন্তান হারানোর কষ্ট। আমার ছেলেকে আল্লাহ যেন শহীদি মর্যাদা দান করেন।’

বাবা আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আব্দুল্লাহর জন্য কবরের পাশে শুধু কাঁদি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি। এখন সবাই আমার খোঁজ-খবর রাখে। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। আরও যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সবার জন্য দোয়া করবেন। আমার ছেলে জীবন দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনেছে। একজন বাবার জন্য এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।’ 

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে বংশাল থানার পাশে তাঁতীবাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন আব্দুল্লাহ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিন মাস ১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৪ নভেম্বর ভোরে মারা যান তিনি। তিনি পুরান ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *