আদিবাসীদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও গ্রাহ্য করা হয়নি- রাঙ্গামাটিতে জুম্মদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় – হিল ভয়েস

হিল ভয়েস

হিল ভয়েস, ৯ এপ্রিল ২০২৫, রাঙ্গামাটি: আজ ৯ এপ্রিল ২০২৫ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা শহরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে আদিবাসী জুম্মদের প্রধানতম সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রাই, সাংলান, চাংক্রান, পাতা উপলক্ষে আয়োজিত ৪ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি সম্পন্ন হয়েছে।

“আদিবাসী জুম্ম জাতির অস্তিত্ব নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে অধিকতর সামিল হই”- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার এবং এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য আসনের সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তীকালে বাংলাদেশকে নতুন আঙ্গিতে গড়তে নানা ধরনের কর্মসূচী হাতে নিতে দেখা গেছে। দেশকে গণতান্ত্রিক ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল করতে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন হয়েছে। তবে কমিশনগুলো আমাদের নিরাশ করেছে। আদিবাসীদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গ্রাহ্য করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বৃহত্তর সামাজিক উৎসবগুলো পালন করতে যাচ্ছি।  কিন্তু আমরা নিরাশ। তবে আমরা তরুণদের নিরাশ করতে পারি না। তারা তাদের স্বকীয়তাকে উদযাপন করুক, উপভোগ করুক এবং জাতির বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পাক।

সম্মানিত অতিথি ঊষাতন তালুকদার বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারো পার্বত্য চট্টগ্রামে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যতায় আদিবাসী জুম্মদের বৃহত্তর সামাজিক উৎসবগুলো পালিত হবে। প্রতিটি জায়গায় মানুষ নিজেদের মতো করে উদযাপন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন বাস্তবতা থাকা সত্ত্বেও আদিবাসীরা নিজেদের স্বকীয় সংস্কৃতি, জীবনবোধ ও শেকড়কে আগলে ধরে বেঁচে আছে। ইতিহাসের পাতায় আদিবাসী জুম্মরা অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু তারা নিজেদের স্বকীয়তাবোধ বিসর্জন দেয়নি। তারা যদি নিজেদের মতো করে স্বতন্ত্রতা নিয়ে বাঁচতে চায় তাহলে দেশের বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীর সমস্যা থাকার কথা না।  আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় জীবনধারাকে স্বীকার করে নিলে, তাদের অধিকার দিয়ে দিলে দেশটা সুন্দর হবে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র উদারতা দেখাতে পারছে না বিধায় পার্বত্য সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। চুক্তি বাস্তবায়ন হয়ে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সুরক্ষিত থাকবে এটা রাষ্ট্রকে বুঝতে হবে। কাজেই, রাষ্ট্রের শুভবুদ্ধি উদয় হওয়া জরুরী।

আলোচনা সভা শেষে পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে একটি র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।  র‍্যালিতে রাঙ্গামাটি শহর ও সদর থানা ইউনিয়ন থেকে হাজারের অধিক ছাত্র-যুব, আবাল, বৃদ্ধ বণিতা অংশগ্রহণ করেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *