ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ নির্ভর করবে গাজা পরিস্থিতির ওপর: জার্মান

Google Alert – সশস্ত্র

ইসরায়েলে নতুন অস্ত্রের চালান অনুমোদন করা হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত গাজার মানবিক পরিস্থিতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে নেবে জার্মানি।

শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওহান ভাদেফুল।

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েল যা করছে, সেটি আন্তর্জাতিক আইনসম্মত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

জার্মানির ‘জুডয়েচন সাইটো’ পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাদেফুল বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজন হলে আমরা এ বিষয়টি যাচাইয়ের ভিত্তিতে ইসরায়েলে ভবিষ্যতে অস্ত্র সরবরাহের অনুমোদন দেব।”

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাদেফুল কয়েকদিন আগেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, বার্লিন ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জার্মানিও ২০২৩ সালে গাজায় যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে এলেও এবারই সবচেয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছে।

সম্প্রতি কয়েক দিনে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধের কারণে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনা বাড়তে থাকার মধ্যে জার্মানিও সুর বদলেছে।

ইওহান ভাদেফুল বলেছেন, ইসরায়েল অন্যান্য যেসব হুমকির মুখে আছে সেগুলো থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা জরুরি- যেমন: ইয়েমেনের হুতি, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরানের হুমকি।

তিনি বলেন, “আমার জন্য, নিঃসন্দেহেই (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন হলোকাস্টে নাৎসি জার্মান সরকারের লাখো ইহুদি নিধনের পরিপ্রেক্ষিতে) ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর বিশেষ একটি দায়িত্ব আমাদের আছে। কিন্তু অন্যদিকে এর মানে এই নয় যে, একটি সরকার যা খুশি তাই করতে পারে।”

যুদ্ধের তিনমাসের মাথায় দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছিল। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত মার্চে গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর থেকেই ইসরায়েলের অবরোধে ত্রাণ প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি নিয়েও বিশ্ব আদালতে আইনি লড়াই চলছে।

অবরোধের কারণে গাজার ৫ লাখ মানুষ অনাহারে আছে। যদিও ইসরায়েল ইচ্ছাকৃত ভাবে অবরোধ দিয়ে গাজায় খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে- এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নেতানিয়াহু।

কিন্তু নেতানিয়াহু অস্বীকার করলেও গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলার মধ্যে খাবার ও ওষুধের অভাবে এক অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এর জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের ইসরায়েল নীতি নতুন করে ভেবে দেখতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং কানাডাও গাজা নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

এর প্রেক্ষাপটে জার্মানিও ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাদেফুলের আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ফিডরিশ ম্যার্ৎস গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলার সমালোচনা করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, “হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রয়োজনে গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা চালানোর আর কোনও যৌক্তিকতা নেই।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়।

এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে- ৫৪,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *