Kalbela News | RSS Feed
রুথবা ইয়াসমিন— প্রথম বাংলাদেশি নারী যিনি পা রাখতে যাচ্ছেন চাঁদের বুকে। গড়তে চলেছেন ইতিহাস। স্পেস নেশনের ‘মুন পায়োনিয়ার’ মিশনের সদস্য হিসেবে এই যাত্রার অংশ হতে যাচ্ছেন তিনি। এ মিশনটি ২০২৫ সালের শেষভাগে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করতে পারে বলে জানিয়েছে ফিনিশ-মার্কিন কোম্পানিটি।
নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের পেজে ১ জুন এক পোস্টে স্পেস নেশন জানিয়েছে, ‘রুথবা ইয়াসমিন— একজন উৎসাহী মহাকাশপ্রেমী যিনি মহাকাশের ভবিষ্যৎ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছেন।’
রুথবা এই মিশনে ৪০,০০০-এরও বেশি আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাইকৃত সাতজনের একজন।
রুথবার এই যাত্রা শুধু একটি ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। এটি বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য গর্ব এবং বিশ্বের নারীদের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা। মহাকাশ এখন আর শুধু পুরুষের ক্ষেত্র নয়, নারীরাও নেতৃত্ব দিতে পারে চন্দ্র অভিযানে।
আন্তর্জাতিক মিশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব
স্পেস নেশন হলো একটি বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, যারা ভবিষ্যৎ মহাকাশ অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক ও বৈচিত্র্যময় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে। তাদের ‘মুন পায়োনিয়ার’ মিশনে রুথবা হচ্ছেন সাত সদস্যের একটি বহুজাতিক দলের একজন। এই দলে রয়েছেন ছয়জন নারী ও একজন পুরুষ সদস্য।
সম্প্রতি রুথবা এই মিশনের জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। প্রশিক্ষণে তিনি শিখেছেন মহাকাশ স্যুট ব্যবহার, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম পরিচালনা, জরুরি মুহূর্তে চাঁদের বুকে বেঁচে থাকার কৌশল এবং দলগতভাবে সংকট মোকাবিলার পদ্ধতি।
রুথবার শিক্ষাজীবনের শুরু ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট হলিওক কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। করোনা মহামারির সময় দেশে ফিরে তিনি ডেটা সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করেন এবং ২০২৪ সালে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
তার মহাকাশে আগ্রহের সূচনা হয় স্নাতক গবেষণার সময়, যেখানে তিনি জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম (সৌর ঝড়) নিয়ে গবেষণা করেন।
রুথবার ভাষায়, ‘মহাকাশে কাজ করার সময় যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়। একটি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে সমস্যা হলে আমাদের খুবই সীমিত সময়ের মধ্যে সংকট নিরসন করতে হয়— যা প্রশিক্ষণের সবচেয়ে কঠিন অংশগুলোর একটি।’
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের সময় শিখেছেন কীভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে নির্ভুলভাবে যোগাযোগ করতে হয় এবং কীভাবে একসঙ্গে কাজ করলে একটি জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়।
মহাকাশে থাকা শুধুই রোমাঞ্চ নয়, এর সঙ্গে আছে শারীরিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জ। রুথবা বলেন, ‘সেখানে প্রতিদিন গোসল করা যায় না। স্পঞ্জ দিয়ে পরিষ্কার হতে হয়। খাবারও আলাদা ধরনের এবং একাকীত্ব, পরিবার থেকে দূরে থাকা, এগুলোও মানসিকভাবে কঠিন।’