Google Alert – আর্মি
পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ৩০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে। শুক্রবার পাকিস্তানের সেনবাহিনীর আন্তঃদপ্তর সংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে আফগানিস্তানের মধ্যে একাধিক সীমান্ত ক্রসিং আছে পাকিস্তানের। আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার হাসান খেল সীমান্ত ক্রসিংয়ের দিয়ে একদল আফগান সন্ত্রাসী পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিল। ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরে সেই সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাকিস্তনের সেনাসদস্যরা গুলি ছোড়ে এবং এতে ১০ জন নিহত হয়।
নিহতদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে। আরও বলা হয়েছে নিহত এই সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের তালেবান গোষ্ঠী তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছিল। এতে নিহত হয়েছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৩ জন সেনাসদস্য।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান— এ দু’টি প্রদেশে গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার নাটকীয় উল্লম্ফন ঘটেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। দুই গোষ্ঠীরই লক্ষ্য খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানকে পাকিস্তানের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা।
২০২১ সাল থেকে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন পরিলক্ষিত হচ্ছে পাকিস্তানে। গত বছর ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। ২০২৪ সালের বছরজুড়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৪৪টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শতকরা হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার ছিল ৪০ শতাংশ বেশি।
পাকিস্তান সন্ত্রাবাদের এই উল্লম্ফণের জন্য আফগানিস্তানকে দায়ী করে আসছে। ইসলামাবাদ বেশ কয়েক বার বলেছে যে টিটিপি ও পাকিস্তানের অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়মিত আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে কাবুল। তবে আফগানিস্তান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত মে মাসে পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে ব্যাপক সংঘাত হয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে। এতে দু’পক্ষে মোট নিহত হয়েছিলেন ৭০ জন।
সূত্র : এএফপি, আনাদোলু এজেন্সি