jagonews24.com | rss Feed
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। বন্যায় ২৫ জন মেয়ে শিশু হারিয়ে যাওয়ার তথ্য আসলেও মোট কত মানুষ নিখোঁজ আছে সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। খবর বিবিসির।
সেখানে একটি সামার ক্যাম্পে অংশ নেওয়া ২৩ থেকে ২৫টি মেয়েকে খুঁজে পেতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চলছে। এছাড়া ওই ক্যাম্পে আটকে পড়া বাকি শিশুদের উদ্ধার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেক্সাসের এই বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ ও ‘মর্মান্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। বন্যায় ওই অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর ক্ষতি হওয়ায় লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বন্যার কারণে টেক্সাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত ২৩৭ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।
হেলিকপ্টার ছাড়াও ‘হাই প্রোফাইল ট্যাকটিক্যাল’ সামরিক বাহন উদ্ধার তৎপরতায় মোতায়েন করা হয়েছে।
টেক্সাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানকার গুয়াডালুপে নদীর পানির উচ্চতা মাত্র ৪৫ মিনিটে ২৬ ফুটের মতো বেড়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই তাদের স্বজনদের নিখোঁজ থাকার তথ্য দিচ্ছেন। একজন মা জানিয়েছেন, তার মেয়ে ও জামাইর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না। অস্টিন থেকে এক নারী জানিয়েছেন, গুয়াডালুপে নদীর কাছেই বাস করছিলেন তার দাদা দাদী। তার নিয়ে তিনি চিন্তিত।
আরও বন্যার শঙ্কা
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, টেক্সাসের পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলে আরও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে হওয়া বৃষ্টির কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতেরও শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
এছাড়া দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলীয় টেক্সাসেও বন্যার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। নদীর তীর এলাকা অস্থিতিশীল ও অনিরাপদ হয়ে উঠতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ক্যাম্প মিস্টিক বিপর্যয়
ক্যাম্প মিস্টিক থেকে ২৩ থেকে ২৫টি মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার তথ্য আগেই দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রায় ৭০০ মেয়ে ছিল বলে জানা গেছে। এটি মেয়েদের একটি প্রাইভেট ক্রিশ্চিয়ান সামার ক্যাম্প। ১৯২৬ সালে কেরভিলের ১৮ মাইল উত্তরপশ্চিমে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো।
টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, বন্যায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে ক্যাম্পটি। সেখানে বিদ্যুৎ নেই, ওয়াইফাইও নেই।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আপনার মেয়ের খোঁজ না পেলে জানানো হবে। আর আপনার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ না করা হলে বুঝবেন যে আপনার মেয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে।
তবে এর মানে এই নয় যে তারা (যারা এখনো নিখোঁজ) হারিয়ে গেছে। তারা হয়তো কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের বাইরে আছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।
দুর্যোগ ঘোষণা করলেন গভর্নর
কাউন্টি শেরিফ ল্যারি এল লেইথা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ২৪- এ উন্নীত হয়েছে তবে তাদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তাদের পরিবারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে।
এদিকে গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট একটি জরুরি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এতে উদ্ধারকর্মীদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, যারা এখনো নিখোঁজ তাদের খুঁজে পেতে নিরবচ্ছিন্ন তল্লাশি চলছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে। রাতের অন্ধকারেও অভিযান চলবে। এটা চলতে থাকবে। তিনি এই পরিস্থিতিকে ‘ব্যতিক্রমী বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
টিটিএন