যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় ভিসা জালিয়াতি কেলেঙ্কারিতে তিন পুলিশপ্রধান গ্রেপ্তার

Google Alert – সশস্ত্র


যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় ভিসা জালিয়াতি কেলেঙ্কারিতে তিন পুলিশপ্রধান গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের থাকার সুযোগ করে দিতে মিথ্যা অপরাধ প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগে লুইজিয়ানার তিনজন বর্তমান ও সাবেক পুলিশপ্রধানকে গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগে বলা হয়েছে, এই তিনজন পুলিশপ্রধান অর্থের বিনিময়ে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতেন, যাতে ওই অভিবাসীরা নিজেদের ‘অপরাধের শিকার’ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য ইউ ভিসার আবেদন করতে পারেন।

বুধবার লাফায়েট শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএস অ্যাটর্নি আলেকজান্ডার ভ্যান হুক জানান, এফবিআই তদন্তে দেখা গেছে, ওকডেল পুলিশের প্রধান চ্যাড ডয়েল, ফরেস্ট হিলের পুলিশপ্রধান গ্লিন ডিকসন এবং সাবেক গ্লেনমোরা পুলিশপ্রধান টেবো ওনিশিয়া মিথ্যা অপরাধ রিপোর্ট তৈরি করতেন।

ওকডেল সিটি মার্শাল মাইকেল স্লেনি এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী চন্দ্রকান্ত প্যাটেলকেও এই জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে

ভ্যান হুক জানান, এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতির ষড়যন্ত্র, ভিসা জালিয়াতি, ঘুষ গ্রহণ, ডাক জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্র্যান্ড জুরি চার্জ গঠন করেছে।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ইউ ভিসা পেতে আগ্রহী অভিবাসীরা প্রথমে চন্দ্রকান্ত প্যাটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করত। এরপর তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশপ্রধানদের দিয়ে তাদের সশস্ত্র ডাকাতির শিকার হিসেবে দেখিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরি করাতেন। প্যাটেল পুলিশপ্রধানদেরকে মিথ্যা সার্টিফিকেট এবং সহযোগী নথিপত্র সরবরাহ করতে বলতেন এবং এর বিনিময়ে তাদেরকে অর্থ দিতেন।

ভ্যান হুক বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, লুইজিয়ানার বাইরের লোকদের ওপর সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এই ডাকাতিগুলো আদৌ ঘটেনি।’

আদালতে বলা হয়েছে, প্রতিটি ভুয়া নামের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রায় ৫ হাজার ডলার করে পেতেন। তিনজন পুলিশপ্রধান মিলিতভাবে শত শত মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করেছেন।

ফেডারেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই জালিয়াতির চক্রটি প্রায় এক দশক ধরে চলছিল এবং গত মাসে এটি বন্ধ করা হয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেস ২০০০ সালে ইউ ভিসা চালু করেছিল মূলত সেসব অভিবাসীদের সহায়তা করার জন্য, যারা ‘মানসিক বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার’ এবং ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারি তদন্তকারীদের সহায়তা করছেন’। এই ভিসার মাধ্যমে অপরাধের শিকার ব্যক্তিরা ও তাদের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্বের পথ পেতে পারেন।

২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০,০০০ ইউ ভিসা ইস্যু করেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।

ভ্যান হুক বলেন, ‘এই ভিসাগুলো অপরাধ তদন্তে ভুক্তভোগী বা সাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। কিন্তু এই মামলায় যেভাবে ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহার হয়েছে, তা গুরুতর।’

দোষী সাব্যস্ত হলে প্রত্যেকের জন্য ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর, ভিসা জালিয়াতিতে ১০ বছর এবং ডাক জালিয়াতির জন্য ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। চন্দ্রকান্ত প্যাটেল ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অতিরিক্ত ১০ বছরের সাজার মুখে পড়তে পারেন। এ ছাড়া প্রতিটি অভিযোগের জন্য তাদের সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার করে জরিমানা করা হতে পারে। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই অভিযুক্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, গাড়ি সহ কিছু সম্পদ জব্দ করেছে।

উল্লেখ্য, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্যগুলোর একটি। ইউ ভিসা সিস্টেমের অপব্যবহার বন্ধে এরই মধ্যে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।

এই তদন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি টাস্ক ফোর্সের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে, যা অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে গঠিত হয়েছিল।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *