Google Alert – সেনাবাহিনী
আহমেদ রেজা:
চব্বিশের ১৯ জুলাই (শুক্রবার) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গুলির পর ছাত্র-জনতা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। এতে পুরো বাংলাদেশ কার্যত অচল হয়ে পড়েছিলো। রাজধানী ঢাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়। ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়।
২০ জুলাই কারফিউর প্রথম দিনের সকালে ঢাকার রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম ছিল। হাতে গোনা কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও হাতে গোনা ছিল।
এদিকে, কারফিউ ঘোষণার রাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গণভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ১৪ দলের নেতাদের সাথে বৈঠক হয়। সেদিন রাতেই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সরকারের তিন মন্ত্রীর কাছে দাবি পেশ করেন।
বৈঠকের পর তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, পদ্মায় ডেকে নিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সেদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় নিয়ে গিয়ে আমাদের দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করানো হয়। আমরা বলেছিলাম, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেখানে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে সেখানে আমরা আলোচনা করতে পারি না। শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
দলটির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, সেদিন আমরা ৮ দফা দাবি দিয়েছিলাম। পাশাপাশি শাটডাউন কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণাও ছিল। কিন্তু এ ঘোষণাটি প্রচার করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে, ২০ জুলাই কারফিউর মধ্যেও রামপুরা, যাত্রাবাড়ি, বাড্ডা, শাহজাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন চলে। পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটে। সেদিন ঢাকায় প্রায় সব রাস্তায় সেনা সদস্যদের অবস্থান ও টহল চলছিলো।
বিটিভি ভবন ও মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সেদিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন সচল হতে এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে বলেও জানায় ডিএমটিসিএল।
এদিন রাতেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ বাড়ানো হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে, কারফিউর কারণে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বাতিল ও যাত্রী ভোগান্তি বেড়ে যায়। ওইদিনই পরিস্থিতি বিবেচনায় টানা দুই দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার প্রসঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুল সংবাদ প্রচার করছে। এ বিষয়ে তাদের চিঠি দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও, এদিন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, রিজভীসহ বিএনপি-জামায়াতের ৭০ নেতাকর্মীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার।
/আরএইচ