গোপালগঞ্জে নিহতদের ময়নাতদন্ত কেন হয়নি, হাসপাতালের ব্যাখ্যা

Kalbela News | RSS Feed

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তরের যে খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য’ বলে দাবি করেছে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তাদের দাবি, চিকিৎসকরা চাইলেও নিহতদের স্বজনরা রাজি না হওয়ায় মরদেহের ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি।

রোববার (২০ জুলাই) গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাসের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলায় অপ্রত্যাশিত ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত না করার বিষয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজনদের বক্তব্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে ময়না তদন্ত না করে লাশ হস্তান্তর করেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য।

‘প্রকৃত ঘটনা এই যে, উল্লেখিত তারিখে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর জরুরী বিভাগে প্রথম মৃতদেহটি আসে, কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনার পর রোগীর স্বজনদের লাশ ময়নাতদন্তের কার্যক্রম শেষ করে লাশ নেয়ার কথা বললে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে জোরপূর্বক লাশ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বাকি মৃতদেহগুলোর স্বজনরা ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হয় না এবং হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করে জোরপূর্বক মৃতদেহ নিয়ে যায়।

‘উল্লেখ্য এ সময় উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং চারদিকে সংঘর্ষ চলমান থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসহায় বোধ করেন। তাছাড়া আহত লোকজনের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয় এবং অন্যান্য কর্মচারী আত্মনিয়োগ করায় এবং বাইরের পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের সাথে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে ঘটনা পুলিশকে মোবাইল ফোনে এবং লিখিতভাবে জানানো হয়।

‘আমরা আশা করি, উল্লেখিত বিবৃতির মাধ্যমে জনমনে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।’

এর আগে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। একই সঙ্গে চলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একপর্যায়ে গুলি ছোড়ে বাহিনীর সদস্যরা।

এতে গুলিবিদ্ধদের গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার মৃতুয ঘটে।

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্ত না করেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে, এই খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার (১৯ জুলাই) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ প্রয়োজনে কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হবে।

এর ঠিক পরদিনই সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত না হওয়ার ব্যাখ্যা দিল গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *