পাকিস্তানের তিরাহ উপত্যকায় সহিংসতায় ৭ জন নিহত

Google Alert – সামরিক

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকায় এক শিশু মেয়েকে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ সহিংসতায় রূপ নেয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন।


প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্যরা পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনকে জানান, রোববার সকালে তিরাহ উপত্যকার বাগ-ময়দান মারকাজে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিগ্রেড সদরদপ্তরের সামনে ঘটনাটি ঘটে।


স্থানীয় কয়েকশত বাসিন্দা এক বালিকার মৃতদেহ নিয়ে বাগ-ময়দান মারকাজে সেনাবাহিনীর বিগ্রেড সদরদপ্তরের সামনে হাজির হয়। তাদের অভিযোগ, শনিবার উপত্যকাটির জখখেলের পীর মেলার দরবার এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর মর্টারের গোলায় শিশুটি নিহত হয়েছে। তারা সেখানে অবস্থান নি এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ শুরু করে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রতিবাদকারীদের মধ্যে একটি অংশ উত্তেজিত হয়ে উঠলে স্থানীয় মুরুব্বিরা তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান, কিন্তু তরুণদের ওই অংশটি তা অগ্রাহ্য করে ব্রিগেড সদরদপ্তরের সামনে পার্ক করে রাখা এক্সক্যাভেটরে আগুন দেয়। এরপর তারা সামরিক ঘাঁটিটির মেইন গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।


এ সময় ঘাঁটির পাহারায় থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মব নিয়ন্ত্রণে গুলিবর্ষণ করে। এতে অন্তত সাতজন নিহত ও আরও ১৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।


রোববারের এই হত্যাকাণ্ড কিংবা আগের দিনের মর্টার হামলার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন বা সামরিক বাহিনী দাপ্তরিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।


সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, একটি এক্সক্যাভেটরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। কিছু প্রতিবাদকারীকে সামরিক ঘাঁটির মেইন গেইট জোর করে খোলার চেষ্টা করতে ও ঘাঁটির দিকে পাথর ছুড়তে দেখা গেছে। গুলির শব্দের মধ্যে প্রতিবাদকারীদের দৌঁড়ে আড়াল নেওয়ার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে।


আহতদের ফ্রন্টিয়ার কোরের হাসপাতালে এবং বারা ও পেশোয়ারের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক।


এ ঘটনার পর বিরাজমান উত্তেজনার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা স্থানীয় সমাজের মুরুব্বিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। খাইবার পাখতুনখওয়ার প্রাদেশিক সরকার নিহত ও আহতদের জন্য পৃথক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।


নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সেক্টর কমান্ডার তিরাহর মুরুব্বিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বৈধ সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর মুরুব্বিদের তত্ত্বাবধানে প্রতিবাদকারীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে যায়।


পাকিস্তান জাতীয় আইন পরিষদ ও প্রাদেশিক আইন পরিষদের স্থানীয় দুই প্রতিনিধি তিরাহ উপত্যকায় সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে স্থানীয়দের বাস্তুচ্যুত না করেই শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।


পীর মেলার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত দশ দিন ধরে তাদের এলাকায় জঙ্গি দমনের নামে নিরাপত্তা বাহিনী মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করছে আর তাতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *