Google Alert – আর্মি
যশোরের অভয়নগরে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে একজন ব্যবসায়ীকে মারধর, বালুতে পুঁতে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার অভয়নগর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। পরদিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় আর্মি ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী আসমা খাতুন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম শাহনেওয়াজ কবীর টিপু। তিনি শিল্প শহর নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি ও নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
আসমা খাতুনের অভিযোগে জানা যায়, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে ব্যবসায়ী টিপুকে সুকৌশলে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির পদ স্থগিত সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির অফিসে ডেকে নিয়ে যান সৈকত হোসেন হিরা নামে এক ব্যক্তি। এ সময় জনি ব্যবসায়ীকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন। এরপর সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে জনির নিজ প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট করেন। টাকা পেয়ে ওইদিন ব্যবসায়ী টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে টিপু গ্রামের বাড়ি উপজেলার চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে হাসপাতাল গেট পার হলে হিরা তার গতিরোধ করেন এরপর বেলা ৩টা পর্যন্ত তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার জানতে পারে, তাকে জনির ‘কণা ইকো পার্কে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই সময় বাদী সেখানে গেলে জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর, বুক পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালু চাপা দিয়ে আরও ২ কোটি টাকা দাবি করেন। ব্যবসায়ী টিপু বাধ্য হয়ে তার ম্যানেজারকে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। এরপর মফিজ এন্টারপ্রাইজের পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট করেন। ওই সময় মফিজ আরও ১ কোটি টাকার চেক আদায় করে জনির নামে কেনা তিনটি ও দিলিফ সাহার নামে কেনা তিনটি মোট ৬টি ১০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
অভিযোগের বিষয় জানতে শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে কয়েক দফা ফোন করা হয় জনিকে। কিন্তু প্রথমদিকে ফোন খোলা থাকলেও পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, বিষয়টি জানতে পেরে তিনি তার ফেসবুক পেজে একটি বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেছেন, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে জনির বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আমাদের কেউ না।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, তিনি আমার কাছে কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।