jagonews24.com | rss Feed
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, আদিকাল থেকে যারা পাহাড়ের পরিবেশ বুঝে বসবাস করছেন, তারা পাহাড় ধসে শঙ্কিত নন। পাহাড়ের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে যাদের গভীর জ্ঞান রয়েছে, তাদের বসবাসের ধরন এমনভাবে গড়ে উঠেছে যে পাহাড় ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের বাড়িঘরে তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না।
তিনি বলেন, যারা পাহাড়ের প্রকৃতি না বুঝে বসবাস শুরু করেন, তারাই এসব দুর্যোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তিনি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পরিবেশ সচেতনতার প্রশংসা করেন।
শনিবার (২ আগস্ট) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের যৌথ আয়োজনে শহরের জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা ও বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, নিজেদের স্বার্থে নির্বিচারে গাছ কাটছি, যার ফলে পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ছে, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সময় পরিবর্তিত হচ্ছে, ঝড়-বন্যার প্রকোপ বাড়ছে- এসবই গাছপালা ধ্বংসের পরিণতি।
তিনি বলেন, কোথায়, কখন, কী ধরনের গাছ লাগানো উচিত- এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে বনায়ন ও হর্টিকালচার করতে হবে। প্রকৃতি ও অর্থনৈতিকভাবে কোন কোন গাছ লাভজনক, তা নির্ধারণে একটি সার্ভে করা প্রয়োজন। কোনো গাছের বিকল্প নির্ধারণ না করে তার চারা রোপণ পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি কেউ সেগুন গাছ রোপণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাহলে হয়তো কেউ জুমচাষ বন্ধের দাবিও তুলতে পারে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু আম, কাঁঠাল নয়- প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কোন কোন গাছ লাগানো উচিত, তা নিয়ে গবেষণা ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙ্গামাটি অঞ্চল ও বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
পরে উপদেষ্টা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন। এর আগে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানোর বার্তা দেন।
এমইউ/এমকেআর