ড. ইউনূসের ‘ক্ষমতার খেলা’ ভেঙে গেছে এনসিপি—মন্তব্য ড. মনজুরের

Google Alert – ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতির আকাশে সম্ভাবনার যে রঙিন ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল এনসিপির ব্যানারে, সেটি এবার ছিন্ন হলো হাওয়ার দিক বদলের সঙ্গে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ভেঙে পড়ার পেছনে দলীয় অভ্যন্তরে জমে থাকা হতাশা, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, এবং আন্তর্জাতিক শক্তির ছায়া কাজ করেছে—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশ্লেষক ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার রাতে এক টেলিভিশন আলোচনায়, রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় ড. মনজুর বলেন, “জুলাই মাসে যে ঘোষণাপত্র নিয়ে দেশ-বিদেশে আলোড়ন উঠেছিল, তাতে মনে হয়েছিল—বাংলাদেশে নতুন ধাঁচের রাজনীতির সূচনা হতে যাচ্ছে। কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা ছিলেন এর পেছনের চালিকাশক্তি। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা ৫ আগস্টের মূল অনুষ্ঠানে অংশ না নিয়ে কক্সবাজারে চলে গেলেন। এটা নিছক ‘ঘুরতে যাওয়া’ নয়, বরং স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।”

তিনি মনে করেন, সেই তরুণ নেতারা আগেই কোনো হতাশাজনক বার্তা পেয়েছিলেন, যার ফলে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে এনসিপি যখন পাঁচ নেতাকে শোকজ করে, যাদের মধ্যে চারজনই ছিলেন দলের মেরুদণ্ডস্বরূপ, তখনই বোঝা যায়—এই কাঠামোর ভিত নড়বড়ে হয়ে গেছে।

ঘটনাপ্রবাহের দিকে ইঙ্গিত করে ড. মনজুর বলেন, “অনুষ্ঠানের আগের দিন এনসিপির অন্যতম নেত্রী সামান্তা শারমীন যখন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘স্বার্থপর’ বলে সমালোচনা করেন, তখনই বোঝা যায়—দলের ভেতরে একমত নয়, বরং মতবিরোধই প্রকট।”

আর এখানেই যুক্ত হয় আন্তর্জাতিক রাজনীতির উপাদান। ড. ইউনূসের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ড. মনজুর বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ড. ইউনূস বিএনপিকে সামনে রেখে নির্বাচনকালীন এক ধরনের ‘সফট ল্যান্ডিং’ বা প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে জটিলতা তৈরি হয়, আর এতে করে নবীন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান থেমে যায় মাঝপথে।”

তার মতে, তরুণদের এই স্বপ্নভঙ্গ কেবল রাজনীতিতে নয়, তাদের মানসিক অবস্থায়ও গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই এখন দেশ ছাড়ার চিন্তায়, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রমুখী হওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ প্রসঙ্গে ড. মনজুর বলেন, “আমি বলছি না যে তাদের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সরাসরি বৈঠক হয়েছে। তবে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে চান, তাহলে পিটার হাস হয়তো পরোক্ষ সহায়তা দিতে পারেন।”

নানা নাটকীয়তা আর প্রতিশ্রুতিশীল সম্ভাবনার পরও এনসিপির এই ভাঙন এক প্রজন্মের রাজনীতিকে হতাশ করে তুলেছে। ‘নতুন কিছু হবে’—এই বিশ্বাস এখন ভেসে যাচ্ছে অনিশ্চয়তার স্রোতে। আর এর মাঝখানে দাঁড়িয়ে ড. ইউনূস হয়ে উঠেছেন কেন্দ্রীয় বিতর্কের চরিত্র—যাকে ঘিরে যেমন প্রত্যাশা ছিল, তেমনি জন্ম নিচ্ছে প্রশ্নও।

মো: রাজিব আলী/

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *