দুই মাসের মধ্যে আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন আসিম মুনির

Google Alert – সশস্ত্র

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। গত দুই মাসের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় সফর। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।

সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলার অবসর গ্রহণ অনুষ্ঠান। সদ্য পাকিস্তান সফরকালে কুরিলা দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছ থেকে সামরিক পদকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ পান। পাকিস্তানের ভূমিকাকে তিনি প্রশংসায় ভাসান।

যদিও ফিল্ড মার্শাল মুনিরের সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্য কোনো কর্মসূচি এখনও জানানো হয়নি, তবে জুন মাসে তার পূর্ববর্তী যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রেক্ষাপট এবং গুরুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল আসিম মুনিরের ‘একান্ত বৈঠক’। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এবং পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সশস্ত্র সংঘাতের প্রেক্ষাপটে। ওই সংঘাতে ভারতের কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের’ জবাবে পাকিস্তান শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান উম মারসুস’। 

পাকিস্তান দাবি করে, এতে তারা ভারতীয় বিমানবাহিনীর ছয়টি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে, যার মধ্যে তিনটি ছিল আধুনিক রাফাল। ৮৭ ঘণ্টাব্যাপী ওই সংঘাতে পাকিস্তানে প্রাণ হারান অন্তত ৪০ বেসামরিক এবং ১৩ সামরিক সদস্য।

হোয়াইট হাউসের ওই বৈঠকে ইরান পরিস্থিতির অবনতিও আলোচনায় উঠে আসে। আসিম মুনির প্রশংসা করেন ট্রাম্পের ‘গঠনমূলক এবং কার্যকর নেতৃত্বের’, বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে দ্রুত যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি করায়। ট্রাম্পও মুনিরের ‘অভিজ্ঞতা ও কঠিন সময়ে দূরদর্শিতা’কে স্বীকৃতি দেন।

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়—বিশেষ করে বাণিজ্য, খনিজসম্পদ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জ্বালানি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং উদীয়মান প্রযুক্তি খাতে।

ফলাফলও এসেছে দ্রুত। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরংজেবের নেতৃত্বে একটি বহুল প্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়। চুক্তিতে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখ এবং বাণিজ্য সচিব জাওয়াদ পল।

পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চুক্তির ফলে দেশটির যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস পাবে। উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলবে।

চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই। এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের বিশাল তেল মজুদের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছি।’ এই খাতে কোন তেল কোম্পানি নেতৃত্ব দেবে, তা নির্ধারণের প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানান তিনি।

তেল ছাড়াও, চুক্তির আওতায় রয়েছে খনিজসম্পদ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও অন্যান্য খাত।

বিশ্লেষকদের মতে, আসিম মুনিরের সফর এবং সাম্প্রতিক চুক্তিগুলো শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। কারণ, ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপে কূটনীতির মেরুকরণ দ্রুত বদলে যাচ্ছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *