Google Alert – সেনাপ্রধান
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের সাথে মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় জুন মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে একটি বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নয়াদিল্লির কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আমেরিকান প্রকাশনাটি জানিয়েছে, মোদি উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, ট্রাম্প তার এবং সেনাপ্রধান মুনিরের মধ্যে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারেন যদি তারা উভয়ই একই সময়ে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করেন।
ভারত আশা করেছিল, ট্রাম্প পাকিস্তানের বেসামরিক নেতৃত্বের সাথে সাক্ষাতে করবে এবং এমনটা করা হলে দেশটি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতো। কিন্তু এর বিপরীতে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নজিরবিহীন আতিথেয়তা দেওয়ায় ভারতের পক্ষে এটিকে একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিনের সংঘর্ষের পর মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ রোধ করার কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন। অন্যদিকে, এই দাবি ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে। এনিয়ে মোদি এবং ট্রাম্পের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। নয়া দিল্লি জোর দিয়ে বলছে যে, যুদ্ধবিরতি সরাসরি দুই দেশের সম্মতিতে হয়েছে।
ট্রাম্প কানাডায় জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলন থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পর ১৭ জুন নরেন্দ্র মোদির সাথে ফোনালাপে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে না পারার পরে এই ফোনালাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
ট্রাম্পের সাথে ৩৫ মিনিটের ফোনালাপে মোদি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের বোমাবর্ষণের পর পাকিস্তানের অনুরোধে উভয় দেশ সরাসরি যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করেছে।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের মতে, মোদি বলেছেন, ভারত “মধ্যস্থতা গ্রহণ করে না এবং কখনও করবে না”। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প “মনোযোগ সহকারে শুনেছেন।”
নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরের দিন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প পাকিস্তানি সেনাপ্রধান অসীম মুনিরের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করার পরিকল্পনা করছেন বলে তার সহযোগীরা জানতে পেরেছিলেন। গোপন এই আলোচনা সম্পর্কে কথা বলা কর্মকর্তারা তাদের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এমন তথ্য সামনে আসার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কানাডা থেকে ফেরার পথে ওয়াশিংটনে থামার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হন। পরিবর্তে মোদি ক্রোয়েশিয়ায় পরিকল্পিত সফর চালিয়ে যান।
প্রতিবেদন যতে, ঘটনার পর ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের তীব্র অবনতি ঘটে।
ট্রাম্প প্রকাশ্যে ভারতের সমালোচনা শুরু করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রপ্তানির উপর ৫০% শুল্ক আরোপের হুমকি দেন এবং দেশের বাণিজ্য বাধা ও অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার সমালোচনা করেন। হুমকির পর শেষ পর্যন্ত তিনি সেই শুল্ক আরোপও করেন।
জুনের ফোনালাপের পর থেকে মোদি এবং ট্রাম্পের মধ্যে আর কোনও কথা হয়নি।
সেনাপ্রধান মুনিরের দ্বিতীয় মার্কিন সফর
বৃহস্পতিবার একটি বিদেশী সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের পর ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান মুনির এই সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এটি হবে তার দ্বিতীয় সফর।
প্রতিবেদন মতে, সেনাপ্রধান মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলার অবসর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। আমেরিকার শীর্ষ এই সামরিক কর্মকর্তাকে ২৬ জুলাই পাকিস্তান সফরের সময় পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি নিশান-ই-ইমতিয়াজ (সামরিক) খেতাবে ভূষিত করেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির সর্বশেষ জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তিনি হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট রুমে ট্রাম্পের সাথে একটি বিরল ব্যক্তিগত বৈঠক করেন। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর মার্কো রুবিও, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এবং পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন। সূত্রঃ জিও টিভি