ইসরায়েলকে গাজার নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা বাতিলের দাবি, বিশ্বজুড়ে কঠোর সমালোচনা

Google Alert – সামরিক

গত শুক্রবার বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের ইসরায়েলের পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে এটি শুধু সংঘাতকে বাড়িয়ে তুলবে এবং আরও রক্তপাতের কারণ হবে। জেনেভা থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সর্বশেষ ঘোষণার প্রতি প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া না জানালেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মঙ্গলবার বলেছেন, তিনি গাজার মানবিক সাহায্য বাড়ানোর দিকে মনোযোগী আছেন এবং বাকিটা ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলের পরিকল্পনাটি ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ সৃষ্টি করবে যা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের অবস্থার অবনতি ঘটাবে। মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক বলেন, এই পরিকল্পনা তাৎক্ষণিক বন্ধ করা উচিত। ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ মানবিক সাহায্যের প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিনা প্রতিশ্রুতিতে বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লায়েন বলেন, ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত। তিনি অবিলম্বে অস্ত্রবিরতি, বন্দিদের মুক্তি এবং মানবিক সাহায্যের অবাধ প্রবাহের দাবি জানান। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা সতর্ক এক পোস্টে বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের ইইউ-ইসরায়েল সম্পর্কের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে।

হামাস: ‘যুদ্ধাপরাধ’: হামাস ইসরাইলের পরিকল্পনাকে ‘গাজার বিরুদ্ধে একটি নতুন যুদ্ধাপরাধ হিসেবে সমালোচনা করেছে এবং বলেছেন এই অভিযান তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।

ইরান: ‘জাতিগত নির্যাতন’: হামাসের সমর্থক ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকাই বলেছেন, ইসরায়েলের পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা করার ইহুদিবাদী সরকারের নির্দিষ্ট অভিপ্রায়ের আরেকটি স্পষ্ট লক্ষণ।

চীন: গাজা ফিলিস্তিনিদের: চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, গাজা ফিলিস্তিনি জনগণের অংশ এবং এটি ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড। মানবিক সংকট নিরসনে, অবিলম্বে অস্ত্রবিরতি প্রয়োজন।

জার্মানি: অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ: জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক পরিকল্পনা কীভাবে বৈধ লক্ষ্য পূরণ করবে তা বোঝা কঠিন। জার্মান সরকার গাজার জন্য সামরিক সরঞ্জামের রপ্তানি বন্ধ রাখবে বলেও জানান।

যুক্তরাজ্য: ‘আরও রক্তপাত’: প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, এই পদক্ষেপ কোনোভাবে সংঘাত শেষ করবে না বা বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করবে না বরং আরও রক্তপাত ঘটাবে।

ফ্রান্স: ‘অন্ধকার পথে’: ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে‘ এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সম্পূর্ণ অন্ধকার পথে নিয়ে যাবে।

কানাডা: মানবিক পরিস্থিতি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেন, আমরা অনেকের সঙ্গে একমত যে এই পদক্ষেপ ভুল এবং এটি মানবিক পরিস্থিতির উন্নতিতে কোনো অবদান রাখবে না। কানাডা আগামী মাসে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তুরস্ক: আন্তর্জাতিক চাপের আহ্বান: তুরস্ক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজার পরিকল্পনা বন্ধে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলেছে যে, ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার ইসরাইলের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন রোধ করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।

স্পেন: ‘ধ্বংস ও দুঃখ’: স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বলেছেন ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা শুধু ধ্বংস ও দুঃখই বয়ে আনবে। তিনি আরও বলেছেন, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, মানবিক সাহায্যের তাৎক্ষণিক ও ব্যাপক প্রবেশ এবং সমস্ত জিম্মিদের মুক্তি জরুরিভাবে প্রয়োজন।

সৌদি আরব: ‘জাতিগত নিধন’: সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক টুইটারে বলেছে ফিলিস্তিনি ভাইদের বিরুদ্ধে ক্ষুধা বর্বরতা ও জাতিগত নিধনের অপরাধের অব্যাহতভাবে নিন্দা জানাই।

জর্ডান: ফিলিস্তিনিদের অধিকার: জর্ডানের রয়্যাল কোর্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে রাজা আবদুল্লাহ এই পদক্ষেপকে দুই-রাষ্ট্র সমাধান এবং ফিলিস্তিনি অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।

মিশর: কঠোর নিন্দা: মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজার ওপর ইসরায়েলের পরিকল্পনা সবচেয়ে শক্তিশালী ভাষায় নিন্দা জানানো হয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *