Google Alert – সেনাপ্রধান
গাজা সম্পূর্ণ দখল করতে চাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় ইসরায়েলের ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সমালোচনার ধাক্কায় নিজের কথাও বদলে ফেলেছেন তিনি। গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা গাজা দখল করতে যাচ্ছি না, আমদের লক্ষ্য হলো গাজাকে হামাসের কবল থেকে মুক্ত করা।’
‘গাজাকে অসামরিকীকরণ করা হবে এবং সেখানে একটি শান্তিপূর্ণ বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এমন একটি সরকার, যার প্রতিনিধিরা কেউ প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি, হামাস কিংবা অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের হবে না।’ ‘আমাদের লক্ষ্য পূরণ হলে একদিকে যেমন আমাদের জিম্মিদের উদ্ধার করা সহজ হবে, তেমনি অন্যদিকে গাজা আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি হিসেবে থাকবে না।’ গত ৫ আগস্ট তেল আবিবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয় ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়েল জামির।
বৈঠকে সেনাপ্রধানের উদ্দেশে উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পুরো গাজা দখলে আনা। এজন্য গাজার সর্বত্র আমাদের অভিযান চালাতে হবে। এমনকি হামাস যেসব অঞ্চলে ইসরায়েলি জিম্মিদের লুকিয়ে রেখেছে বলে আমরা সন্দেহ করছি, সেসব অঞ্চলেও চালাতে হবে অভিযান। আমাদের এই লক্ষ্য যদি আপনার পছন্দ হয়- তাহলে দায়িত্ব পালন করুন, নয়তো ইস্তফা দিন।’ বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্যরা নেতানিয়াহুর সঙ্গে একমত হলেও দ্বিমত পোষণ করেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, গাজা সম্পূর্ণ দখল হলে তা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য ফাঁদ হয়ে উঠবে, সেখানে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবন আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং সর্বোপরি ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বর্তমান যে অবস্থা- তাতে গাজা সম্পূর্ণ দখলে নতুন অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যকে আমলে না নিয়ে নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা নিজেদের অবস্থানেই অটল থাকেন। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও নেতানিয়াহু বলেন গাজা সম্পূর্ণ দখল করাই তার প্রধান লক্ষ্য। তবে এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা জানায় ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), সৌদি আরব, মিসরসহ বিভিন্ন দেশ। জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদও নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। ঘরে-বাইরে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা পরিস্থিতির মধ্যেই গত শুক্রবার নিজের আগেকার কথা ঘোরালেন নেতানিয়াহু।