Google Alert – সশস্ত্র
নির্বাচনে ফিরছে ‘না’ ভোট, অনিয়মে ফল বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে ইসি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) একগুচ্ছ যুগান্তকারী সংশোধনী চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নির্বাচনে ‘না’ ভোটের পুনঃপ্রবর্তন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবস্থার বিলুপ্তি এবং কোনো নির্বাচনী আসনে অনিয়ম প্রমাণিত হলে তার পুরো ফলাফল বাতিলের ক্ষমতা কমিশনের হাতে ফিরিয়ে আনা। একই সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার,(১১ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের মুলতবি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই মুলতবি সভা শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত হলেও আরপিও সংশোধন নিয়ে আলোচনা শেষ না হওয়ায় সভাটি মুলতবি করা হয়েছিল। কমিশনের প্রস্তাবনাটি চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এরপর উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনসাপেক্ষে এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে।
চূড়ান্ত হওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনী অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো আসনে একজনমাত্র প্রার্থী থাকলেও তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে না। তাকে ‘না’ ভোটের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। যদি কোনো আসনে ‘না’ ভোটের সংখ্যা প্রার্থীর পাওয়া ভোটের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে সেখানে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান ছিল সব আসনে। পরে নবম সংসদে তা বাদ দেয়া হয়। এবার ‘না’ ভোটের বিধান চালুর প্রস্তাব ছিল সংস্কার কমিশনেরও।
নতুন বিধান অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে কমিশন একটি, দুটি বা প্রয়োজনে পুরো আসনের ফলাফল বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে। পাশাপাশি হলফনামায় কোনো প্রার্থী মিথ্যা তথ্য দিলে বিজয়ী হওয়ার পরেও তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকরের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমসংক্রান্ত সবধরনের বিধিবিধান বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘ইভিএম ব্যবহার হবে না। তাই যাবতীয় বিধান বিলোপ করা হয়েছে আরপিও সংস্কারের প্রস্তাবে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি সুস্পষ্ট করা হয়েছে। তিন কর্ম দিবসের তদন্ত ও ব্যবস্থা ইসিকে জানাতে হবে তিন দিনের মধ্যে।’
এছাড়া আরও যেসব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসির বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে আবুল ফজল জানান, কমিশন অন্যান্য বাহিনীর মতো সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের আইনশৃঙ্খলায় নামাতে পারবে। তিনি আরও জানান, দুজন প্রার্থী সমান ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ হলেও নির্বাচনে নিজ নিজ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে হবে। ফলাফল ঘোষণার সময় সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকতে পারবেন।