Google Alert – সেনাবাহিনী
ইতিহাসের চোরাগলি পেরিয়ে পাল্টেছে এ শহর কিন্তু শুধু নামের মধ্যে দিয়ে এই জায়গা বহন করে চলেছে কত স্মৃতি। আজ জেনে নেব এই চেনা শহরের সেই রকমই এক অজানা স্মৃতির কথা। সপ্তদশ শতকের শেষ দিকে ক্ষমতার লড়াই চলছিল বর্ধমানকে কেন্দ্র করে। ১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দের সেই সময় রাজা না হলেও বর্ধমানের তৎকালীন শাসক ছিলেন কৃষ্ণরাম রায়। যিনি ছিলেন বর্ধমানের রাজা চিত্রসেন রায়ের দাদু। তিনিই খনন করিয়েছিলেন কৃষ্ণসায়র কিন্তু পরবর্তী সময় সেই সায়রেই স্নান করার সময় খুন হতে হয় তাকে। আর ঠিক সেই সময় কৃষ্ণরাম রায়কে সহায়তার জন্য ঢাকার নবাব জবরদস্ত খান তার বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে বর্ধমানে আসেন।
advertisement
বর্তমানে যে জায়গাটির ‘নবাবহাট’ নামে পরিচিত সেই জায়গাতেই তাঁবু ফেলেন সেনাবাহিনী থাকার জন্য। ধীরে ধীরে ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির জন্য বসতে শুরু করে একটি ছোট মেলা যা পরিণত হয় হাটে। পরবর্তীতে জবরদস্ত খান তার সেনাবাহিনী নিয়ে ফিরে গেলেও হাটটি সেই জায়গায় থেকেই যায়। কারণ ততদিনে আশেপাশের গ্রামের মানুষের কেনাকাটা ও ব্যবসার জন্য একটি স্থান হয়ে উঠেছিল জায়গাটি। যেহেতু নবাবকে কেন্দ্র করে ওই হাট গড়ে ওঠে তাই ওই হাটের নামও হয়ে যায় নবাবহাট। পরবর্তী সময়ে রানী বিশাল কুমারী ১০৮ মন্দির গড়ে তোলেন ওই এলাকায়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছুই গড়ে উঠেছে একের পর এক আকাশচুম্বি অট্টালিকা। তেমনভাবেই পরিবর্তন ঘটেছে বর্ধমানের নবাবহাটেও। তবুও নামের মধ্য দিয়ে বহু স্মৃতি বহন করে চলেছে এই এলাকা। বর্তমানে প্রতিদিন আর হাট বসে না বরঞ্চ নবাবহাটে গড়ে উঠেছে একটি বাসস্ট্যান্ড যেখানে প্রতিদিন প্রায় হাজারে হাজারে মানুষ আসে তাদের গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য আবার অনেকেই আসে ১০৮ মন্দিরে পুজো দিতে কিন্তু আজ তাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই হয়তো জানেন না এই এলাকার ইতিহাস বা নামের পিছনে লুকিয়ে থাকা ‘এই’ কাহিনী।
সায়নী সরকার